পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাটডাউনের হুঁশিয়ারি
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের বেতন এবং কাজের শর্তের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে শাটডাউন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গত শনিবার তারা মানববন্ধন করেছেন এবং তাদের তিনটি দাবি জানিয়েছেন: ১) হাসপাতালের কর্মী, রোগী, নার্স এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ২) শামীম আল আজাদ চিকিৎসককে ওএসডি করার আদেশ বাতিল করা, ৩) হাসপাতালের কার্যক্রম চালু রাখতে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলোচনা শুরু করেছে, তবে আন্দোলন অব্যাহত থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাটডাউনের হুঁশিয়ারি, সেবা বন্ধ
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের বিভিন্ন দাবির প্রতি অসন্তোষ জানিয়ে শাটডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শনিবার, তারা মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এই মানববন্ধনে প্রায় ৮০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং ৩০ জন নার্স অংশ নেন। এটি ছিল তাদের আন্দোলনের তৃতীয় দিন, যেখানে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে মানববন্ধন করা হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এর আগে গত শুক্রবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনটি প্রধান দাবি জানান: হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; চিকিৎসক শামীম আল আজাদকে ওএসডি করার আদেশ বাতিল করা; এবং হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু রাখতে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা।
এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৪ এপ্রিল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) পুকুরে শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে। এরপর পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১৭ এপ্রিল, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসক শামীম আল আজাদকে ওএসডি করে। এরপর থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেবা বন্ধ রেখে মানববন্ধন পালন করে আসছেন।
একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক জানান, যদি তাদের দাবিগুলি যেমন শামীম আল আজাদের ওএসডি আদেশ বাতিল এবং আশিকের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত না করা হয়, তবে তারা শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আরও বলেন, অনেক সময় রোগীর মৃত্যুর পর চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের ওপর হামলা হয়, যা তাদের জন্য শঙ্কার বিষয়। তারা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন।
মানববন্ধনে বলা হয়, ২০ বছর আগে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন এটি মেডিকেল কলেজে উন্নীত হলেও, পূর্বের জনবল কাঠামো অপরিবর্তিত রয়েছে। রোগীর সংখ্যা বাড়লেও চিকিৎসক মাত্র ২০ জন। সীমিত জনবল ও সরঞ্জাম নিয়ে রোগীর চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতা এবং দোষারোপের সংস্কৃতি চিকিৎসকদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধান না হলে তারা শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, “ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং দ্রুতই এ বিষয়ে সমাধান আসবে।” আগামীকাল স্বাস্থ্য বিভাগের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলন চলমান থাকায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। কয়েকজন রোগী এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
What's Your Reaction?
Like
0
Dislike
0
Love
0
Funny
0
Angry
0
Sad
0
Wow
0